বাংলা শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস
• ভূমিকা : একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় সেমিস্টার বাংলা বিষয়ে মোট 40 নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে। এই 40 নম্বরের মধ্যে বাংলা শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস থেকে মোট 5 নম্বর আসবে। পরীক্ষায় এখান থেকে তিনটি প্রশ্ন থাকবে যে-কোনো একটি প্রশ্নের উত্তর করতে হবে। প্রশ্নের ধরন হবে গোটা 5 নম্বরের। আজকের এই প্রতিবেদনে একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় সেমিষ্টার বাংলা পরীক্ষার জন্য এই অধ্যায় থেকে খুব গুরুত্বপূর্ণ বেশ কয়েকটি প্রশ্নের উত্তরসহ বলে দিবো। এখান থেকে পরীক্ষায় 100% পড়বে।
- আগের পর্বে ১০ টি প্রশ্নের উত্তর বলে দিয়েছি। দেখতে হলে ক্লিক করো।
একাদশ শ্রেণির - বাংলা শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস
১১/ বাংলা কাব্যে সাহিত্যে মধুসূদন দত্তের অবদান আলোচনা করো।
১২/ বাংলা কাব্য জগতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কৃতিত্ব আলোচনা করো।
১৩/ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
১৪/ বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলামের কবিপ্রতিভার পরিচয় দাও নিজের ভাষায়।
১৫/ বাংলা নাট্যসাহিত্যে দীনবন্ধু মিত্রের কৃতিত্ব আলোচনা করো।
----------------------------------------------
১১/ বাংলা কাব্য সাহিত্যে মধুসূদন দত্তের অবদান আলোচনা করো।
অথবা
• মাইকেল মধুসূদন দত্তে কাব্য সাধনা সম্বন্দ্বে একটি সংক্ষিপ্ত নিবন্ধ লেখ।
উত্তর: বাংলা কাব্যসাহিত্যে সাইকেল মধুসূদন দত্তের (১৮২৪- ) আবির্ভাব বিস্ময়কর। বাংলা কাব্যের নব যুগের প্রবর্তক হলে মধুসূদন। বাংলা কাব্যে তাঁর অবদান কতখানি তা নীচে আলোচনা করছি
বাংলা কাব্যে তাঁর অবদান :
(ক) তিলোত্তমাসম্ভব কাব্য ও মেঘনাদবধ কাব্য: তিনি বাংলা পয়ারের কাঠামোর মধ্যে অন্ত্যমিল তুলে দিয়ে অমিত্রাকর ছন্দে প্রথম রচনা করেছিলেন 'তিলোত্তমাসম্ভব' কাব্য (১৮৬০)। পাশ্চাত্য ভাবাদর্শে অনুপ্রানিত কবি তিলোত্তমার সৌন্দর্য বর্ণনায় ওদেশীয় রোমান্টিকতার অপূর্ব প্রকাশ ঘটিয়েছেন। মধুসূদন দত্তের শ্রেষ্ঠ কীর্তি নয়টি সর্গে বিন্যস্ত 'মেঘনাদবধকাব্য' (১৮৬১)। "মেঘনাদবধকাব্য" বাংলা ভাষায় রচিত প্রথম শিল্পসার্থক সাহিত্যিক মহাকাব্য। এই কাব্যে মধুসূদন রামায়ণ-এর কাহিনি ও চরিত্রগুলিকে নিজস্ব পরিকল্পনা অনুযায়ী পরিবর্তন করতে দ্বিধা করেননি। তাঁর এই কাব্যে রাম বা লক্ষ্মণ নন, রাবণ এবং মেঘনাদই নায়ক-সহনায়কে পরিণত হয়েছেন।
(খ) বীরাঙ্গনা কাব্য: কেবল 'মেঘনাদবধকাব্য'ই নয়, বাংলা পত্রকাব্য তিনিই প্রথম রচনা করেন - বীরাঙ্গনা (১৮৬২) কাব্য। এগারো সর্গে সমাপ্ত কাব্যটির প্রতি সর্গে বামায়ন কিংবা মহালেবত থেকে গৃহীত বীরাঙ্গনা চরিত্র কাব্যের নায়িকা।
(গ) ব্রজাঙ্গনা কাব্য: মধুসূদনের 'ব্রজাঙ্গনা' কাব্যটি তাঁর প্রতিভার আর এক স্বাক্ষর। শ্রীরাধার বিলাপোক্তি তাঁর ব্রজাঙ্গনা কাব্যের মূল বক্তব্য। যে কবি একই সঙ্গে মেঘনাদবধ কাব্য ও ব্রজাঙ্গনা কাব্য লিখতে পারেন, একসঙ্গে যিনি তুর্যধবনি এবং বংশীধবনি করতে পারেন, তিনি যে কত বড় কবি তা তর্কের অপেক্ষা রাখে না। ব্রজাঙ্গনা'র কবিতাগুলি ভাষা ও ছন্দের জন্যেও আকর্ষণীয়। এইখানে যতি সংখ্যায়, ছত্র সংখ্যায় মিলে এবং মাত্রাবৃত্তের ব্যবহারে মধুসূদন যে স্বাধীনতা দেখালেন তা অমিত্রাক্ষর পয়ার প্রবর্তনের অপেক্ষা কম গুরুত্বপূর্ণ নয়।
(ঘ) সনেট বা চতুর্দশপদী কবিতা: বাংলা সাহিত্যে মধুসূদনের আর একটি বিস্ময়কর অবদান হচ্ছে সনেট অথবা চতুর্দশ পদাবলী কবিতা। পেত্রার্ক, শেক্সপীয়র এবং মিল্টনের অনুকরণে বাংলাকাব্যে তিনি চতুর্দশ পদাবলী রচনা করেছিলেন। সংযত শব্দ যোজনা, আর ভাবকল্পনায় কবিতাগুলি বাংলা কাব্য জগতে একটি নতুন দিগন্তের সন্ধান দিয়েছে।
উপসংহার: বাংলা কাব্যে মধুসূদন একাই একটি যুগ। আধুনিক বাংলা সাহিত্যের প্রথম পর্বে মধুসূদনের মতো প্রতিভার আবির্ভাব হয়েছিল বলেই পরবর্তী কালের বাংলা কাব্যের এত দ্রুত এবং এত উন্নতি ও পরিবর্তন সম্ভব হয়েছিল। বাংলা কাব্য সাহিত্যে মাইকেল মধুসূদন দত্তের অবদান কতখানি তা বলার অপেক্ষা রাখে না।
----------------------------------------------
একাদশ শ্রেণির - বাংলা শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস | Class 11 Bangla Shilpo Sahitya o Sanskriti Itihas
----------------------------------------------
১২/ বাংলা কাব্য জগতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কৃতিত্ব আলোচনা করো।
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের আধুনিক যুগের একজন বিশ্ব বিখ্যাত লেখক হলেন বিশ্বকবি রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর (১৮৬১-১৯৪১ খ্রি.)। বাংলা কাব্য জগতে রবীন্দ্রনাথ ঠাকুরের কৃতিত্ব নীচে আলোচনা করছি -
সমালোচকরা সুদীর্ঘ রবীন্দ্র কার্যপ্রবাহকে বেশ কয়েকটি পর্বে ভাগ করেছেন। যেমন -
(ক) সূচনা পর্ব (১৮৭৮-১৮৮১ খ্রিঃ): এই সময়ে রচিত হয়েছিল 'বনফুল', 'ভানুসিংহ ঠাকুরের পদাবলি', 'কবিকাহিনী', 'শৈশব সংগীত' ইত্যাদি কাব্য। এই সময়ের লেখা অধিকাংশ কাব্য এবং কবিতাই রোমান্টিক ভাবময়তায় ভরা, আর সেই জন্যেই সেইগুলি উচ্ছ্বাসপূর্ণ।
(খ) উন্মেষ পর্বঃ (১৮৮২-১৮৮৬ খ্রি.): এই পর্বের মধ্যে সন্ধ্যাসঙ্গীত, প্রভাতসঙ্গীত, ছবি ও গান, কড়ি ও কোমল ইত্যাদি কাব্যগুলি লিখলেন। এই পর্বে রবীন্দ্রনাথ অস্ফুটভাব ও তরল আবেগের পিচ্ছিল পথ ছেড়ে দিয়ে স্বকীয় ভাব-ভাবনার মধ্যে সর্বপ্রথম প্রতিষ্ঠিত হলেন।
(গ) ঐশ্বর্যপর্ব (১৮৮৬-১৮৯৬ খ্রি.): এই পর্বটি তাঁর সর্বশ্রেষ্ঠ পর্ব বলা হয়। কারণ শিল্পরূপ, আবেগ, রোমান্টিকতা ও গভীর প্রত্যয়ের এমন সমন্বয় অন্য পর্বে এতটা হয়েছে কি না সন্দেহ। 'মানসী', 'সোনার তরী', 'চিত্রা', ও 'চৈতালি' কাব্যে কবি-চেতনার এক অভূতপূর্ব বিকাশ দেখা যায়।
(ঘ) অন্তর্বর্তী পর্ব (১৮৯৬-১৯১০ খ্রি): এই পর্বের কাব্যগ্রন্থগুলি হল 'কথা', 'কাহিনী', 'ক্ষনিকা', 'শিশু', 'খেয়া' প্রভৃতি। খেয়া' কাব্যে কল্পনার জগৎ ছেড়ে তিনি এক মন্ময় জগতের দিকে পাড়ি জমালেন। কবি-জীবনে এ এক বিশ্বয়কর উপলব্ধি।
(ঙ) গীতাঞ্জলি পর্ব (১৯১০-১৯১৫ খ্রি): এই পর্বের 'গীতাঞ্জলি', 'গীতিমালা', ও 'গীতালি' তাঁর খুব গুরুত্বপূর্ণ কাব্য। গীতাঞ্জলি'ই কবিকে শ্রেষ্ঠ আসন দান করেছেন, পুরস্কৃত করেছে নোবেল পুরষ্কার দিয়ে। এই কাব্যগুলির মূলকথা কবির সঙ্গে তাঁর ঈশ্বরচেতনার অঙ্গাঙ্গি সম্বন্ধ।
(চ) বলাকা পর্ব (১৯১৬-১৯২৯ খ্রি.): 'বলাকা', 'পূরবী' আর 'মহুমা' কবি-জীবনে পরিপক্কতার ফসল। এই পর্বের কাব্যে রবীন্দ্রনাথের যে জাগ্রত জীবনবোধ, বুদ্ধির যে বিস্ময়কর দীপ্তি এবং বিশ্ব সম্বন্ধে যে বিশালতার ইজ্জিত রয়েছে, তা তাঁর প্রৌঢ় জীবনের এক প্রকার বিস্ময়কর ব্যাপার বলেই মনে হবে।
(ছ) অন্ত্য পর্ব (১৯২৯-১৯৪১ খ্রি.): এযুগের শ্রেষ্ঠ কাব্য তাঁর 'পুনশ্চ'। এরপর তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগুলি হল- 'প্রান্তিক', 'সেঁজুতি', 'নবজাতক', 'আরোগ্য', 'জন্মদিন' ইত্যাদি। এগুলির মূলসুর হল বাস্তবজীবনের প্রতি আকৃষ্ট কবি সাধারণ মানুষের সঙ্গে মিলিত হওয়ার আকাঙ্ক্ষায় অধীর।
উপসংহার: আলোচনার পর বলতে পারি তাঁর সৃষ্টি শুধু বাংলা সাহিত্যে কেন বিশ্বসাহিত্যের সর্বকালের মহার্ঘ সম্পদ। সুতরাং বাংলা সাহিত্যে তাঁর অবদান অনস্বীকার্য।
----------------------------------------------
ক্লাস 11 বাংলা শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস
----------------------------------------------
১৩/ বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের উপন্যাস সম্পর্কে সংক্ষেপে আলোচনা করো।
অথবা
বাংলা উপন্যাসে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের অবদান সম্পর্কে আলোচনা করো।
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের উপন্যাসে বিভূতিভূষণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের (১৮৯৪-১৯৫০) আবির্ভাব যেমন আকস্মিক তেমনই বিস্ময়কর। কেননা বাংলা উপন্যাসে যে অদ্ভূত সিদ্ধিলাভ করেছেন তা ভাবলেই অবাক হতে হয়।
বাংলা উপন্যাসে তাঁর অবদান : তাঁর প্রথম ও শ্রেষ্ট উপন্যাস 'পথের পাঁচালী'। গভীর সহানুভূতি নিয়ে গ্রাম বাংলার প্রকৃতি, ছোটো ছোটো সুখ-দুঃখ ভরা প্রাত্যহিক জীবন আর একটি স্বপ্নময় বালকের বিস্ময়কর কাহিনি এই উপন্যাসে। বালক অপু যেন বিভূতিভূষণের প্রতিরূপ। এছাড়াও আরো কয়েকটি উল্লেখযোগ্য তাঁর উপন্যাস হল- 'অপরাজিতা', 'দৃষ্টিপ্রদীপ', 'আরণ্যক', 'দেবযান', 'ইছামতী' ইত্যাদি।
তাঁর আরণ্যক উপন্যাসে লেখক বিহারের হাজারিবাগ অঞ্চলের লবটুলিয়া, নাড়া-বইহারের রুক্ষ প্রকৃতিকে সাহিত্যের বিষয় করে তুলেছেন। 'দেবযান'-এর কল্পলোকে তিনি খুঁজে নিতে চেয়েছেন জীবনের আনন্দকে। আর বিশেষ সময়ের পটভূমিতে গ্রামীন জীবনের ইতিহাস রচিত হয়েছে তাঁর 'ইছামতী' উপন্যাসে।
উপসংহার: আলোচ্য আলোচনার পর বলতে পারি বিভূতিভূষণের সাহিত্যে একদিকে একটি সরল পল্লিগ্রাম মানুষ-সে সামাজিক, হৃদয়বান, পরদুঃখকাতর, সংযতেন্দ্রিয়, অন্যদিকে একটি ঘরভোলা মুগ্ধদৃষ্টি কিশোর-যার চোখের সামনে প্রকৃতি প্রতিদিন নব নব রহস্যের যবনিকা উন্মোচিত করেছে এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের সাধনার মধ্য দিয়ে পরিশেষে সে বিশ্বরূপের সন্ধান পেয়েছে। সুতরাং বাংলা উপন্যাসে তাঁর অবদান অপরিসীম।
----------------------------------------------
বাংলা শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস class 11 | bangla sahitya itihas class 11
----------------------------------------------
১৪/ কাজী নজরুল ইসলামের কাব্যচর্চার সংক্ষিপ্ত পরিচয় দাও।
অথবা
বাংলা সাহিত্যে কাজী নজরুল ইসলামের কবিপ্রতিভার পরিচয় দাও নিজের ভাষায়।
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের একজন বিখ্যাত বিদ্রোহী কবি হলেন কাজী নজরুল ইসলাম (১৮৯৮-১৯৭৬)। বাংলা সাহিত্যে পৌরুষদীপ্তি রুদ্রভাবের কবিতা লিখে নতুনত্বের সূচনা করেন। তিনি বিদ্রোহাত্মক গান ও কবিতা রচনার জন্য 'বিদ্রোহী কবি' আখ্যা পেয়েছেন।
তাঁর কাব্যচর্চা বা কবিপ্রতিভার পরিচয়ঃ নজরুলের জীবন ও কাব্য দুই-ই বিস্ময়কর, অভিনব ও উৎকেন্দ্রিক। তাঁর উল্লেখযোগ্য কাব্যগ্রন্থগুলি হল - অগ্নিবীনা, বিষের বাঁশী, ভাঙার গান, সাম্যবাদী, সর্বহারা, ফনিমনসা ইত্যাদি। বিষয়বস্তু অনুসারে নজরুলের কবিতাগুলিকে কয়েকটি শ্রেণিতে ভাগ করা যেতে পারে-
১. প্রতিবাদী কবিতা: নজরুল মানুষের পরাধীনতার যন্ত্রণা থেকে ব্রিটিশ শাসনের বিরুদ্ধে তো বটেই,পাশাপাশি যে-কোনো অন্যায়-অত্যাচারের বিরুদ্ধেই কলম চালিয়েছেন । তাঁর এরকম একটি কবিতা হল 'বিদ্রোহী'।
২. প্রেম ও সৌন্দর্য বিষয়ক কবিতা: কাজী নজরুলের লেখা অধিকাংশ কবিতার বিষয় প্রেম, সৌন্দর্যপিপাসা কিংবা ভক্তির আবেগ। এই শ্রেণির প্রতিনিধিস্থানীয় কবিতা 'দোলনচাঁপা'।
৩. শিশুদের উপযোগী কবিতা: তাঁর বেশ কয়েকটি শিশুমনের উপযোগী কল্পনানির্ভর কবিতা লিখেছিলেন, তার মধ্যে গুরুত্বপূর্ণ গুলি হল -'লিচু-চোর', 'প্রভাতী', 'খুকী ও কাঠবেড়ালী', প্রভৃতি।
৪. যৌবন বন্দনা: বিদ্রোহের কবি হওয়ায় যৌবন বন্দনা প্রত্যাশিতভাবেই নজরুলের কবিতার একটি অবিচ্ছেদ্য অঙ্গ। স্বাধীনতা ও বিপ্লবের মন্ত্রে দেশের যুবক সম্প্রদায়কে উজ্জীবিত করে তুলতে উদ্দীপনামূলক কবিতা তিনি অনেক লিখেছিলেন।
উপসংহার: আলোচনার পর বলতে পারি তাঁর কাব্য-কবিতায় বিদ্রোহ ও বীর্যের হুংকার দিয়েই কাব্যজীবন সমাপ্ত হয়নি। কারণ গজল গানে প্রেমের অনবদ্য প্রকাশ নজরুল প্রতিভার মধ্যে দেখা যায়। সুতরাং বাংলা সাহিত্যে তাঁর কবিপ্রতিভা অপরিসীম।
----------------------------------------------
একাদশ শ্রেণির - বাংলা শিল্প সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস | Class 11 Bangla Shilpo Sahitya o Sanskriti Itihas
----------------------------------------------
১৫/ বাংলা নাটকের ইতিহাসে দীনবন্ধু মিত্রের ভূমিকা সংক্ষেপে বিচার কর।
অথবা
বাংলা নাট্যসাহিত্যে দীনবন্ধু মিত্রের কৃতিত্ব আলোচনা করো।
উত্তর: বাংলা সাহিত্যের উনবিংশ শতাব্দীর উল্লেখযোগ্য নাট্যকার হলেন দীনবন্ধু মিত্র (১৮৩০-১৮৭৩) খ্রি.)। তিনি বাস্তব জীবনচিত্র সংবলিত সমসাময়িক সমাজ-জীবনের অতি উজ্জ্বল আলেখ্য রচনা করেছেন। কেননা তিনি যে বহুমুখী অভিজ্ঞতা লাভ করেছিলেন তাঁর নাটক এবং প্রহসনে সেই অভিজ্ঞতার নিদর্শন রয়েছে।
বাংলা নাট্যসাহিত্যে তাঁর কৃতিত্ব: তাঁর প্রথম ও শ্রেষ্ট নাটক 'নীলদর্পন (১৮৬০)। এই নাটকটিই তাঁকে অসাধারণ খ্যাতির অধিকারী করেছে। কারণ বাংলার চাষিদের উপর নীলকর সাহেবদের নির্মম অত্যাচার ও তা প্রতিরোধের কাহিনি অবলম্বনে 'নীলদর্পন' রচনা করেন। সংলাপ ও বাকরীতির ব্যবহারে এবং চরিত্র-চিত্রণে অসাধারণ বাস্তবতার পরিচয় রেখেছেন নাট্যকার। তবে তাঁর 'নবীন তপস্বিনী', 'লীলাবতী' এবং 'কমলে কামিনী' নাটকগুলি নীলদর্পণের তুলনায় ম্লান।
দীনবন্ধু মিত্র প্রহসনধর্মী নাটকেও তাঁর প্রতিভার স্বাক্ষর রেখেছেন।'বিয়ে পাগলা বুড়ো', 'জামাই বারিক', 'লীলাবতী' ও 'সধবার একাদশী' তাঁর রচিত প্রহসন। এক বিয়ে পাগলা বুড়োর নকল বিয়ের কৌতুককর কাহিনি 'বিয়ে পাগলা বুড়ো' প্রহসনের প্রতিপাদ্য বিষয়। চরিত্র ও কাহিনি নিতান্ত সাধারণ মানুষের। 'জামাই বারিক'-এ ঘরজামাই প্রথার উপর হাস্যাত্মক ব্যঙ্গের আঘাত হানা হয়েছে। কৌতুক চরিত্র নদের চাঁদ 'লীলাবতী'-র আকর্ষণীয় বিষয়। 'সধবার একাদশী'তে সে যুগের নব্যশিক্ষিত যুবসম্প্রদায়ের ভ্রষ্ট চরিত্রের কাহিনী তুলে ধরা হয়েছে।
উপসংহার: বাংলা কাব্যে মধুসূদনের যে স্থান, নাট্যজগতে দীনবন্ধুর স্থান তার চেয়ে কিছুমাত্র কম নয়; তাঁর নাটকগুলি প্রথিতযশা নটেরা অভিনয় করে শহর আর শহরতলীতে নাট্যাভিনয়কে উচ্চতর সংস্কৃতির সিংহাসনে সগৌরবে প্রতিষ্ঠিত করেছিলেন।
----------------------------------------------
Class 11 Bangla Shilpo Sahitya o Sanskriti Itihas |Bangla Shilpo Sahitya o Sanskriti Itihas Class 11
----------------------------------------------
• উপসংহার : আগের দুটি পর্বে খুব গুরুত্বপূর্ণ ১০ টি প্রশ্নের উত্তর বলে দিয়েছি। আজকে এই পর্বে আরো খুব গুরুত্বপূর্ণ পাঁচটি প্রশ্নের উত্তর সহ বলে দিলাম। আর যারা আমাদের অফলাইন কোচিং সেন্টারে পড়াশোনা করছো, তাদেরকে Free PDF দেওয়া হবে। আমাদের এই প্রতিবেদনগুলো যদি আপনাদের কাজে লাগে তবেই আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে।
আরো পড়ুন | Link |
---|---|
1. বাংলা শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস পর্ব -১ | Click Here |
2. বাংলা শিল্প-সাহিত্য ও সংস্কৃতির ইতিহাস পর্ব -২ | Click Here |
4. ভাবসম্মিলন কবিতা - বিদ্যাপতি | Click Here |
5. একাদশ শ্রেণির নতুন বাংলা প্রশ্নপত্র | Click Here |
• আমাদের সঙ্গে যুক্ত হতে চাইলে Follow করো -
SOCIAL MEDIA | FOLLOW |
---|---|
Whatsapp Group | Click Here |
Telegram | Click Here |
• Comment করো :(contact-form)
শুভেচ্ছা সহ,
WB Semester Team
Thank you 😊
উত্তরমুছুন