একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় সেমিষ্টার প্রবন্ধ রচনা সাজেশন 2025
• ভূমিকা :
দেখো ভাই, তোমরা জানো Class 11 Second Semester বাংলা মোট 40 নম্বরের লিখিত পরীক্ষা হবে। আর এই 40 নম্বরের মধ্যে 10 নম্বরের একটি প্রবন্ধ রচনা করতে হবে। তাই এই বছর Class 11 Second Semester বাংলা পরীক্ষার জন্য যে প্রবন্ধ রচনাগুলি পরীক্ষায় আসার সম্ভাবনা খুব বেশি, সেই প্রবন্ধ রচনাগুলির সাজেশন বলে দিলাম এবং এই প্রবন্ধ রচনাগুলির উত্তরও বলে দিবো। চলো শুরু করি -
একাদশ শ্রেণীর প্রবন্ধ রচনা সাজেশন 2025
* এই বছর একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় সেমিষ্টার পরীক্ষার জন্য গুরুত্বপূর্ণ প্রবন্ধ রচনা গুলি হল -
1. বাংলার ঋতুবৈচিত্র্য
2. বৃক্ষরোপণ / একটি গাছ একটি প্রাণ
3. দৈনন্দিন জীবনে বিজ্ঞান / প্রাত্যহিক জীবনে বিজ্ঞান / বিজ্ঞান ও কুসংস্কার / বিজ্ঞানের আশীর্বাদ না অভিশাপ / বিজ্ঞানের সুফল ও কুফল / বিজ্ঞানের ভালো মন্দ
4. তোমার জীবনের লক্ষ্য
5. পরিবেশ দূষণ ও তার প্রতিকার / দূষণ প্রতিরোধে ছাত্রসমাজের ভূমিকা / পরিবেশ সুরক্ষায় ছাত্র-ছাত্রীদের ভূমিকা
6. বিশ্ব উষ্ণায়ন
7 .বাংলা উৎসব
8. চরিত্র গঠনে খেলাধুলার ভূমিকা / খেলাধুলা ও ছাত্রসমাজ
9. একটি গাছের আত্মকথা
10. তোমার দেখা একটি মেলা / একটি ভ্রমণের অভিজ্ঞতা
11. রক্তদান জীবন দান
- আগের পর্বে অনেক গুলি প্রবন্ধ রচনার উত্তর বলে দিয়েছি। যদি না দেখে থাকো তাহলে দেখে নাও - Click Here
তোমার দেখা একটি মেলা
[ রচনা সংকেত : ভূমিকা - নানাধরনের মেলা - রথের মেলা - নানাধরনের সওদা-ফল বিক্রয় - মনিহারি দোকান - নাগরদোল ও পুতুলনাচ]
• ভূমিকা :
'মেলা' কথাটি আমাদের দেশে বড়োই পরিচিত। এক একটি উৎসবকে কেন্দ্র করে আমাদের দেশে বসে বড়ো মেলা। স্নানযাত্রার মেলা, রথের মেলা, গাজনের মেলা, ঝাঁপানের মেলা এবং চড়কের মেলা আমাদের কাছে খুবই পরিচিত। গ্রামের ভিতরেই দেখা যায় এই সব মেলার রমরমা। শহরেও এইসব মেলা বসে বটে, কিন্তু তেমনভাবে এগুলো শহরবাসীদের মন জয় করতে পারে না। তার কারণ শহরবাসীরা উন্নাসিক, আর গ্রামের লোকেরা হৃদয়বান। শহরে বসে 'বইমেলা' বা 'শিল্পমেলা'।
(ক) নানাধরনের মেলা :
গাজনের মেলা হল শিবের বা ধর্মরাজের। মনসার হল ঝাঁপান। চড়ক উৎসব উপলক্ষে নানাধরনের সন্ন্যাসী দেখা যায়। এই সন্ন্যাসীরা নানাধরনের দৈহিক কসরত দেখিয়ে লোককে মুগ্ধ করে। সেদিক থেকে দেখতে গেলে স্নানযাত্রা ও রথের মেলা অনেক সুস্থ। সন্ন্যাসীদের উৎপাত নেই। উৎপাত নেই সাপুড়েদেরও।
(খ) রথের মেলা :
এখানে আমি যে মেলাটির বিবরণ তুলে ধরেছি, সেটি হল রথের মেলা। আমাদের গ্রামে এই মেলাটি আমি প্রতি বছরই দেখি। রথের উৎসব অনুষ্ঠিত হয় বর্ষাকালে। আষাঢ়ে। আর এই মেলা চলে উলটো রথ পর্যন্ত, সুতরাং বৃষ্টিকে এই মেলা কিছুতেই এড়াতে পারে না। যে রথটি সারা বছর ধরে পড়ে থাকে অবহেলায়, সেই রথকে ঝেড়ে মুছে ঝকমকে করা হয়। কাঠের রথে নতুন করে রং পড়ে। মোটা মোটা কাছি দিয়ে ব্যবস্থা হয় রথ টানার। সকালবেলায় পুজোর শেষে যখন রথ টানা হয়, তখন বিশাল জনসমাগমে গমগম করতে থাকে রথের প্রান্তর। প্রতি বছর আমি সেই সময় হাজির থাকি। আমিও রথের রশি ধরে টানি।
(গ) নানাধরনের সওদা দোকান :
মাঠের দু'ধারে বসে রাশি রাশি দোকান। এই দোকানগুলোতে নানাধরনের জিনিস বিক্রি হয়। কোনো কোনোটাতে বিক্রি হয় নানারকমের মিঠাই। কোনো কোনোটিতে বিক্রি হয় পাঁপড় ভাজা। বাদাম ভাজা। ছোলা-মটর ভাজাও বিস্তর বিক্রি হয়। এই মেলার অনেকগুলো দোকানে বিক্রি হয় গরম গরম পরোটা আর মাংস। বিক্রি হয় চপ-কাটলেট। চা, ডিম ভাজা। ঘুগনি। মেলা দেখবার ফাঁকে ফাঁকে মেলার লোকেরা এইসব খাবারের দোকানে ঢুকে প্রচুর খাওয়াদাওয়া করে।
(ঘ) নানাধরনের ফল বিক্রয় দোকান :
আষাঢ় মাসটা হল আম-কাঁঠালের মাস। দূরদূরান্ত থেকে বহু লোক আসেন আম-কাঁঠালের সওদা নিয়ে। এঁদের আম-কাঁঠাল-লিচু প্রচুর বিক্রি হয়। বিক্রি হয় আলু- পটল-উচ্ছে-ঝিঙেসহ নানান ধরনের শাকসবজি। এ মেলায় ইদানীং মাছের স্টলও দেখা যায়।
(ঙ) মনিহারি দোকান :
তবে মেলার সবচেয়ে আকর্ষক বিষয় হল মনিহারি দোকানগুলো। কাচের চুড়ি, পেতলের আংটি, খেলনা, বন্দুক, দম দেওয়া মোটরগাড়িসহ বহু মনোহারি সামগ্রী দেখা যায় এইসব দোকানে। গত বছর এইরকম একটি দোকান থেকে আমি একটি সুন্দর খাপে মোড়া ছুরি কিনেছিলাম।
(চ) নাগরদোল ও পুতুলনাচ :
আমাদের রথের মেলার আরও আকর্ষণ আছে। বন্দুক দিয়ে গুলি ছুড়ে বেলুন ফাটানো আমাদের এক উত্তেজক আকর্ষণ। আকর্ষণ করে নাগরদোলাও। আমাদের রথের মেলায় প্রতি বছর আসে নাগরদোলা। পুতুলনাচ হল আমাদের মেলার আর-একটি বিশেষ আকর্ষক ব্যাপার। মেলার সময় প্রতি রাতে পুতুলনাচ হয়। রাত্তির দশটা এগারোটা পর্যন্ত চলে এই পুতুলনাচ। আমাদের দেখা এই বিশেষ মেলাটি হল সত্যি সত্যিই 'মিলনমেলা'। জাতিধর্মনির্বিশেষে এখানে সকলে আসে, এসে এক হয়ে যায়।
----------------------------------------------
class 11 prabanda suggestion | class 11 semester 2 prabanda suggestion
বিজ্ঞানের জয়যাত্রা
[রচনা সংকেত : ভূমিকা - বিজ্ঞানের সূচনা - বিজ্ঞানের জয়যাত্রা-শিক্ষাক্ষেত্রে - চিকিৎসায় মানবসভ্যতার অগ্রগমন (আশীর্বাদ) - উপসংহার।]
• ভূমিকা :
একদিন মানুষ ছিল প্রকৃতির দাস, খেলার পুতুল। কিন্তু মানুষই ধীরে ধীরে দুরস্ত ও দুর্বিনীত প্রকৃতিকে জয় করেছে বিজ্ঞানের বলে। ঐ যে ট্রেন ছুটছে শত-সহস্র যাত্রীকে বহন করে, ঐ যে অশান্ত সমুদ্রের দুরন্ত ঢেউগুলিকে উপেক্ষা করে মাল ও যাত্রী নিয়ে জাহাজ ছুটছে, ঐ যে বিমানের সাহায্যে মানুষ একমাসের পথ কয়েক ঘন্টায় অতিক্রম করছে- এ সমস্তই বিজ্ঞানের দান। বিজ্ঞানের সাহায্যে মানুষ দূরকে নিকট করেছে, পৃথিবীর কোন্ সেই অজানা দেশের মানুষও আজ আমাদের প্রতিবেশী হয়ে উঠেছে।
(ক) বিজ্ঞানের সূচনা :
মানুষ যেদিন প্রথম আগুন জ্বালাতে শিখেছে, সেদিনই বিজ্ঞানের সূচনা হয়েছে। তারপর মানুষ আবিষ্কার করেছে বাষ্পশক্তি, বিদ্যুৎশক্তি। বাষ্পশক্তি ও বিদ্যুৎশক্তিকে যেদিন মানুষ কাজে লাগিয়েছে, সেদিন থেকেই বিজ্ঞানের উজ্জ্বল সম্ভাবনাও সূচিত হয়েছে।
(খ) বিজ্ঞানের জয়যাত্রা :
বড় বড় শহরে যে ইলেকট্রিক ট্রাম ও ট্রেন চলছে, প্রবাসী প্রিয়জনকে টেলিগ্রাফের সাহায্যে খবর দিচ্ছি, দূর ও অল্প দূরের সামান্য সংবাদও যে টেলিফোনের সাহায্যে সংগ্রহ করছি, আমাদের গৃহে মাথার উপর যে পাখা ঘুরছে, ঘরে বসে আরাম করে বেতারের মাধ্যমে কত দূর-দূরান্তের সংবাদ জানছি, বিজলী আলোয় আমাদের ঘরের অন্ধকার দূর করছি-এ সমস্তই বৈদ্যুতিক শক্তির কাজ-তথা বিজ্ঞানের কাজ।
(গ) শিক্ষাক্ষেত্রে বিজ্ঞানের দান :
শিক্ষাবিস্তারের ক্ষেত্রেও বিজ্ঞানের অবদান কম নয়। মানুষ যেদিন লিপির ছাঁচ তৈরি করল, মুদ্রণ-যন্ত্র আবিষ্কার করল সেদিন থেকেই সর্বমানবের মধ্যে সামাজিক প্রসার ঘটল, সাহিত্যের ও দর্শনের ঘটল অভাবনীয় প্রচার ও প্রসার। সেই সঙ্গে এসে যোগ দিল সংবাদ-পত্র। সভ্যতার বিস্তারে এই সংবাদপত্রের অবদান এককথায় বলে শেষ করা যায় না।
(ঘ) চিকিৎসায় বিজ্ঞানের দান :
সেই প্রাচীনকাল থেকে মানুষ দুরারোগ্য ব্যাধির হাতে নিগৃহীত হচ্ছে। কিন্তু চিকিৎসা জগতে বিজ্ঞানের দান অবর্ণনীয়। আজ কঠিন পীড়ায় আক্রান্ত হয়ে মানুষ মৃত্যুর মুখোমুখি দাঁড়িয়েও ঔষধের ব্যবহারে প্রাণ ফিরে পাচ্ছে, হাত-পা ভাঙলে তা জোড়া লাগছে, চোখের দৃষ্টি হারালে সেই দৃষ্টি মানুষ আবার ফিরে পাচ্ছে। আজ বিজ্ঞান সত্যই মৃত্যুকে আংশিকভাবে জয় করতে পেরেছে। মানুষের জীবনকে দীর্ঘায়ু দান করেছে বিজ্ঞান।
(ঙ) মানবসভ্যতার অগ্রগমন ও বিজ্ঞান :
মানব সভ্যতার অগ্রগমনের সঙ্গে সমান তালে তাল রেখে বিজ্ঞানের জয়যাত্রা আজও অব্যাহত। সুন্দর পোশাক-পরিচ্ছদ, সুদৃশ্য অট্টালিকা, বাঁধানো পথ-ঘাট, বিজলী আলো, রেডিও, সংবাদপত্র, চলচ্চিত্র, কলকারখানা, বিবিধ যানবাহন-এক কথায় যে বস্তুগুলি মানুষকে সভ্যসমাজের নাগরিকত্ব দান করেছে, আজ কোনো ক্রমেই এই বস্তুগুলিকে জীবন থেকে পরিহার করবার কথা কেউ কল্পনা করতে পারে না। বিজ্ঞান আজ নানাভাবেই মানবজীবনকে সমৃদ্ধ করছে, জীবনে এনে দিয়েছে বৈচিত্র্য ও অধিক মনোহারিত্ব।
• উপসংহার :
কল্যাণ-কামনা নিয়েই বিজ্ঞানের উদ্ভব হয়েছে, মানুষ মরণের পথ থেকে বিজ্ঞানের কল্যাণে নবজীবনের কূলে প্রত্যাবর্তন করছে। আর সেই বিজ্ঞান আজ মানুষকে মৃত্যুর মুখে ঠেলে দিচ্ছে কেন? জানি বিজ্ঞানের শক্তি অসীম-একহাতে তার অমৃতভাণ্ড, অন্যহাতে তার বিষভাণ্ড। বিজ্ঞানের কল্যাণময়ী শক্তিকেই আশীর্বাদ বলে বরণ করি, কিন্তু তার প্রলয়ংকরী শক্তিকে কেউ কামনা করে না। বিজ্ঞান যদি তার অভিশাপের আগ্নেয়াস্ত্রকে সংবরণ করে জগতের শুভবুদ্ধিকে জাগ্রত করতে সাহায্য করে তবে তার আশীর্বাদের পুষ্পাঞ্জলি মানুষ মাথা পেতে গ্রহণ করবে।
- এই প্রবন্ধের অনুসরণে লেখা যায় : * বিজ্ঞানের অবদান। * বিজ্ঞান আমাদের কাছে আশীর্বাদ না অভিশাপ? * বিজ্ঞানই মানব সভ্যতার ধারক-বাহক।
---------------------------------------
prabandha rachana class 11 | prabandha rachana class 11 semester 2
গাছ লাগাও প্রাণ বাঁচাও
[রচনা সংকেত : ভূমিকা - মানুষের সভ্যতায় বৃক্ষের ভূমিকা - প্রাচীনকালে দেবতার আসনে বৃক্ষ - বৃক্ষ বিনাশ ও বর্তমানে বৃক্ষরোপণ মানুষের সঙ্গে বৃক্ষের সম্পর্কে ও বনাঞ্চলের প্রয়োজন - উপসংহার।]
• ভূমিকা :
বৃক্ষের সঙ্গে মানুষের সম্পর্ক চিরদিনের। সভ্যতার সূচনায় মানুষ তার সুদীর্ঘ জীবন কাটিয়েছে অরণ্যের আশ্রয়ে। বৃক্ষের ফলমূল জুগিয়েছে তার খাদ্য, বল্কল ও পত্র দিয়েছে তার লজ্জা নিবারণের আবরণ। গাছের সুশীতল ছায়ায় বিশ্রাম নিয়েছে আর নিবিড় বৃক্ষতলে ও বৃক্ষকোটরে নিরাপদ আশ্রয় গ্রহণ করেছে। সে এক কথায় গাছের কাছে মানুষ অনেক কারণে ঋণী।
(ক) মানুষের সভ্যতায় বৃক্ষের ভূমিকা :
কিন্তু আধুনিক সভ্যতা মানুষ ও প্রকৃতির এই নিবিড় বন্ধনকে ছিন্ন করেছে। সভ্যতার অঙ্গ হিসেবে নগরজীবন যতই প্রসারিত হয়েছে ততই অরণ্যকে ধ্বংস করে গগনচুম্বী প্রাসাদ গড়ে উঠেছে বিলাসবহুল সুখের লোভে। কিন্তু সেদিন থেকেই যেন প্রকৃতির অভিশাপ বর্ষিত হয়েছে মানুষের জীবনে। মানুষ ক্রমশ হয়ে উঠছে তাপতপ্ত, রোগজীর্ণ, অশান্ত ও রুক্ষ। তাই আজ মানুষের কণ্ঠে ধ্বনিত হচ্ছে আবার অরণ্যের আকাঙ্ক্ষা-'দাও ফিরে সে অরণ্য লও এ নগর।'
(খ) প্রাচীনকালে দেবতার আসনে বৃক্ষ :
প্রাচীনকালে বহু রাজা, বহু নবাব পথের দুধারে বৃক্ষরোপণ করে ক্লান্ত পথিকের বিশ্রামের ব্যবস্থা করেছেন। আবার বহু সাধকের সাধনস্থল ছিল বৃক্ষতল। সম্রাট অশোক বোধিবৃক্ষের চারা প্রেরণ করেছিলেন সুদূর সিংহলে। বুদ্ধদেবের সাধনস্থল ছিল বোধিবৃক্ষতল। দক্ষিণেশ্বরের পঞ্চবটী এখনো পবিত্র স্থান রূপে পরিগণিত। আধুনিক সভ্যতার ফলশ্রুতি ছাড়াও কখনো অভাবের তাড়নায়, আবার কখনও অসাধু কাঠ ব্যবসায়ীর চক্রান্তে প্রচুর বৃক্ষ বিনাশের ফলে সমগ্র বায়ুমণ্ডল দূষিত হচ্ছে এবং বৃষ্টিপাত কমেছে । ফলে মানুষের জীবনে নেমে এসেছে এক ভয়াবহ সর্বনাশ।
(গ) বৃক্ষবিনাশ ও বর্তমানে বৃক্ষরোপণ :
বনভূমি সূর্যকিরণ বিচ্ছুরণ ভারসাম্য রক্ষা করে, আবহাওয়াকে নিয়ন্ত্রণ করে, বাতাসকে পরিশুদ্ধ করে। বৃক্ষ ভূমিক্ষয় নিবারণ করে। দেশে শিল্পকারখানা বিস্তারের ফলে বায়ুমণ্ডল দূষিত হয়ে পড়ছে। যানবাহনের ধোঁয়া বায়ুমণ্ডলকে দূষিত করছে। এই ভয়াবহ বায়ুদূষণ থেকে রক্ষা করতে পারে একমাত্র গাছ। অরণ্য অঞ্চল কমে গেলে বৃষ্টিপাতের পরিমাণ কমে যায়। ফলে কৃষিব্যবস্থা বিপর্যস্ত হয়ে পড়ে। অতএব কৃষি উৎপাদনের ক্ষেত্রেও গাছের ভূমিকা বিরাট। শহর ও গ্রামকে শ্যামলসুন্দর করে তোলার জন্যও গাছের প্রয়োজন। তাই শিল্পাঞ্চলে বৃক্ষরোপণ অপরিহার্য প্রয়োজন ।
• উপসংহার :
বনসংহার নয় বনমহোৎসব আজ নানা কারণেই বিশেষ গুরুত্ব লাভ করেছে। বৃক্ষরোপণ ও বৃক্ষসংরক্ষণ মানুষের প্রয়োজন মেটায়, মানুষকে ধ্বংসের হাত থেকে রক্ষা করে, মানুষের স্বাস্থ্য সৌন্দর্য বৃদ্ধি করে এবং দেশের সবুজশ্যামল রূপটি উদ্ভাসিত হয়ে উঠুক। বৃক্ষসংহারের নিষ্ঠুর প্রবৃত্তি পরাজিত হোক। সার্থক হোক বনমহোৎসবের শুভ উদ্দেশ্য। কণ্ঠে কণ্ঠে ধ্বনিত হোক- 'একটি গাছ, একটি প্রাণ, গাছ লাগান, প্রাণ বাঁচান।'
এই প্রবন্ধের অনুসরণে লেখা যায়: * বন মহোৎসব। * গাছের সঙ্গে চাষের সম্পর্ক।
------------------------------------------
Class 11 Semester 2 প্রবন্ধ রচনা সাজেশন 2025
বইমেলা
[রচনা সংকেত : ভূমিকা - বইমেলার সূচনা ও স্বরূপ - বইমেলায় বই-এর বৈচিত্র্য, দর্শক ও ত্রেতার বৈচিত্র্য-লেখক - পাঠক-প্রকাশকদের মিলনক্ষেত্র - দেশ-বিদেশে বইমেলা - উপসংহার ]
• ভূমিকা :
'মেলা' কথাটির অর্থ মিলন। উৎসবের আনন্দে বহু লোকের সমাগমই 'মেলা'। প্রাত্যহিক জীবনের ক্লান্তি ও অবসন্নতার হাত থেকে মুক্তি পাওয়ার জন্য মানুষের মন বৈচিত্র্যের সন্ধানে ব্যাপৃত হয়। 'মেলা' সেই অবসাদ ও ক্লান্তি দূর করে মনে স্ফূর্তি এনে দেয়। ভারতবর্ষে প্রাচীনকাল থেকেই নানা ধর্মীয় অনুষ্ঠানকে কেন্দ্র করে মেলা বসত। আধুনিক কালে মেলার বৈচিত্র্য ঘটেছে।
(ক) বইমেলার সূচনা ও স্বরূপ :
১৯৭৬ খ্রীষ্টাব্দের ৫ই মার্চ থেকে বইমেলা প্রথম শুরু হয় কলকাতা ময়দানে। সেই থেকে ভারতের নানা প্রদেশে, এমনকি পশ্চিমবাংলার জেলা, মহকুমা পর্যায়েও বইমেলা বেশ সাড়া জাগিয়েছে। বইমেলার উদ্যোক্তা "পাবলিশার্স এ্যান্ড বুকসেলার্স গিল্ড।" বই শিল্পকে জনপ্রিয় শিল্প করে তোলার জন্য এই সংস্থার প্রতিষ্ঠা করেছিলেন নবীন ও প্রবীণ কয়েকজন পুস্তক বিক্রেতা ও প্রকাশক। এঁদের উদ্দেশ্য ভারতবর্ষের তথা বিশ্বের মানুষকে শিক্ষাব্যাপারে উৎসাহ দেওয়া, শিক্ষাবিস্তারে সহায়তা করা এবং বই ব্যবসার গৌরব বৃদ্ধি করা। নতুন বই দিয়ে ঘর সাজানোর আগ্রহ থেকেই সাম্প্রতিককালের বইমেলার উদ্ভব।
(খ) বইমেলায় বই-এর বৈচিত্র্য, দর্শক ও ক্রেতার বৈচিত্র্য :
বইমেলা সাধারণত বসে শীতকালে। বিদ্যোৎসাহীরা মেলার আনন্দকে সম্পূর্ণভাবে উপভোগের জন্য ও মেলাকে সর্বাঙ্গসুন্দর করে তোলার জন্য বিচিত্রানুষ্ঠানের আয়োজনও করে থাকেন। মেলায় বই-এর স্টল ছাড়াও খাদ্যদ্রব্যের স্টলও থাকে। এইসব স্টলে চা, কফি, নানা ভাজাভুজি বিক্রয়ের ব্যবস্থা থাকে। বইমেলায় আসে ছোট ছোট ছেলেমেয়ে, লেখক, শিক্ষক এবং সমাজের নানান বয়সের সাধারণ মানুষ। ধর্মতত্ত্ব থেকে শুরু করে রন্ধন শিল্প পর্যন্ত সকল বিষয়ের বই-ই মেলার স্টলগুলিতে মজুত থাকে। ইতিহাস, ভূগোল, দর্শন, বিজ্ঞান, খেলাধুলা, কারিগরি বিদ্যা, সিনেমা প্রভৃতি বিষয়ের বই-এর বিপুল সম্ভারে সজ্জিত থাকে স্টলগুলি। দেশী, বিদেশী লেখকের বই বইমেলার যে কোনো স্টলে গেলেই পাওয়া যায়। এবং মেলায় সাধারণত ইংরেজি বই-এর চাহিদাই থাকে সবচেয়ে বেশি। নিম্নমানের বই-এর পাশাপাশি ক্লাসিক বই, সৎ সাহিত্যের চাহিদাও আছে।
(গ) লেখক- পাঠক-প্রকাশকদের মিলনক্ষেত্র :
মেলার প্রাঙ্গণটিতে লেখক-পাঠক-প্রকাশকের মিলনক্ষেত্র রচিত হয়। দেশীয় প্রকাশকদের সঙ্গে সঙ্গে বহু বিদেশী প্রকাশক মেলায় সমবেত হন তাঁদের পসরা নিয়ে। পাঠকগণও ঘুরে ঘুরে নিজেদের পছন্দমত বই কেনার সুযোগ পান। আবার প্রকাশকেরাও ছাড় দিয়ে কম দামে পাঠকদের হাতে বই তুলে দিয়ে আনন্দ পান। এতে ব্যবসার সঙ্গে সঙ্গে ব্যবসার অঙ্গ প্রচারকাজও চলে। ক্রেতা ছাড়াও মেলায় এক শ্রেণীর দর্শক সমাগত হয়। ঘুরে ঘুরে স্টল দেখাতে, বই-এর সঙ্গে পরিচিত হওয়াতেই যাঁদের আনন্দ।
(ঘ) দেশ-বিদেশে বইমেলা :
কলকাতার বইমেলা সারা ভারতে আলোড়ন সৃষ্টি করেছে। এ পর্যন্ত যতগুলি বইমেলা অনুষ্ঠিত হয়েছে, তার মধ্যে নভেম্বরে কলকাতায় বাংলাদেশ বইমেলা, ডিসেম্বরে জামসেদপুরে আর বর্ধমানে বইমেলা, জানুয়ারিতে পশ্চিমবঙ্গ সরকার আয়োজিত বইমেলা এবং পশ্চিমবঙ্গ প্রকাশক সংস্থার বইমেলা উল্লেখযোগ্য। বিদেশেও বইমেলা যথেষ্ট জনপ্রিয় হচ্ছে।
• উপসংহার :
পশ্চিমবঙ্গের সরকারি পরিচালনায় প্রথম বইমেলা অনুষ্ঠিত হয় ১৯৮৬-র ৭ই জানুয়ারি থেকে ১৪ই জানুয়ারি কলকাতার ময়দানে। বাংলা বই-এর সঙ্গে পাঠকের ভাববিনিময় ও পরিচয় ঘটানো এবং বাংলা বই প্রকাশনায় উৎসাহ প্রদানই এই মেলার প্রধান উদ্দেশ্য। বর্তমানে বইমেলার সংখ্যা খুবই সীমাবদ্ধ। এই মেলাকে গ্রাম-গ্রামান্তরে ছড়িয়ে দেওয়া দরকার।
--------------------------------------------------
একাদশ শ্রেণীর দ্বিতীয় সেমিষ্টার প্রবন্ধ রচনা সাজেশন 2025
গ্রন্থাগার
• ভূমিকা :
মানুষের সঙ্গে পশুর পার্থক্য-মানুষের অসীম জ্ঞানপিপাসা-সেই জ্ঞানভাণ্ডারকে ধরে রাখার চেষ্টা-তালপত্র, ভূর্জপত্র, কাষ্ঠ বা প্রস্তরফলকের যুগ শেষ-মুদ্রণযন্ত্রের আবিষ্কার বহু গ্রন্থের সৃষ্টি-গ্রন্থগুলিকে সযত্নে রক্ষা করার ও পাঠকদের বিবিধ জ্ঞানপিপাসা মিটাবার জায়গা গ্রন্থাগার।
(ক) শ্রেণীভেদ :
ব্যক্তিগত পাঠাগার-সাধারণ পাঠাগার-মুদ্রণযন্ত্র আবিষ্কারের পূর্বেও সাধারণ পাঠাগার ছিল-চীন, আরব, রোম, গ্রীস, ভারতবর্ষের নালন্দা বিশ্ব-বিদ্যালয়, ইত্যাদি-বর্তমানে শহরে-গ্রামে অজস্র সাধারণ পাঠাগার গড়ে উঠেছে।
(খ) উপযোগিতা :
বিদ্যালয়ের বাইরে স্বাধীন সুশিক্ষার কেন্দ্র পাঠাগার-বিজ্ঞানী, সংগীতবিদ, রাজনীতিবিদ, দার্শনিক, সাহিত্যানুরাগী, ধার্মিক-সকল শ্রেণীর মানুষ নিজ নিজ প্রাণের ক্ষুধা অনুসারে জ্ঞান আহরণ করছে-পরম তীর্থভূমি-পাঠে মগ্ন পাঠক শ্রীক্ষেত্র-দর্শনের আশা আজও করে-বৈচিত্র্যহীনতা ও মানসিক ক্লান্তি অপনোদনের আদর্শস্থান-দরিদ্র মানুষদের মনের খোরাক জোগানোর উপায়-দরিদ্র ছাত্রদের উপকার-গবেষকদের কাছে এর দাম অপরিসীম।
(গ) উল্লেখযোগ্য পাঠাগার :
আমাদের জাতীয় গ্রন্থশালা, বঙ্গীয় সাহিত্য পরিষদ, কায়রো ও আলেকজান্দ্রিয়ার গ্রন্থশালা, প্যারিসের বিবলিওথেক, ন্যাশনাল লাইব্রেরি, লন্ডনের ব্রিটিশ মিউজিয়াম, আমেরিকার বোস্টন লাইব্রেরি, ভারতের বিভিন্ন লাইব্রেরি, এশিয়াটিক সোসাইটি ইত্যাদি বর্তমানে সরকারি সহায়তায় গ্রন্থাগার স্থাপন ও মান উন্নয়ন।
• উপসংহার :
সাধারণ পাঠাগার আরও সার্বজনীন করা কাম্য।
----------------------------------------------
• শেষ কথা : উপরের সমস্ত প্রবন্ধ রচনাগুলি উওর একটি পর্বে বলে দেওয়া সম্ভব নয়, তাই দ্বিতীয় পর্বে বাকি প্রবন্ধ রচনা গুলির উত্তর বলে দিবো। উপরের Menu Option এ ক্লিক করে দেখতে পারো। আমাদের এই পরিশ্রম আপনাদের কাজে লাগলে অবশ্যই Comment করে জানাতে ভুলবেন না।
আরো পড়ুন - এখানে মাধ্যমিক পরীক্ষার প্রবন্ধ রচনা আজে। এগুলিও তোমাদের কাজে লাগবে। দেখতে হলে - Click Here
আরো পড়ুন | Link |
---|---|
1. একাদশ শ্রেণীর প্রবন্ধ রচনা সাজেশন | Click Here |
2. ভাবসম্মিলন - কবিতার বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Click Here |
4. ছুটি - গল্পের বড়ো প্রশ্ন ও উত্তর | Click Here |
5. একাদশ শ্রেণির নতুন বাংলা প্রশ্নপত্র | Click Here |
SOCIAL MEDIA | FOLLOW |
---|---|
Whatsapp Group | Click Here |
Whatsapp Channel | Click Here |
Telegram | Click Here |
Thank You !