Type Here to Get Search Results !

এই ব্লগটি সন্ধান করুন

html body submit korechi WB Semester Ads-1

একাদশ শ্রেণির নতুন দর্শন প্রজেক্ট খাতা || Class 11 Philosophy PROJECT 2025

একাদশ শ্রেণির নতুন দর্শন প্রজেক্ট খাতা

ভূমিকা :
একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সেমিষ্টারে যারা পড়াশোনা করছো। তাদেরকে একটি Project খাতা তৈরি করতে হবে। আমি আজকের এই লেখাতে Class 11 Second Semester Philosophy বা দর্শন Project খাতা তৈরি করে দিলাম । চল শুরু করি... 
class 11 project 2025

Class 11 Project 2025

WBCHSE Board Class 11 Second Semester ছাত্রছাত্রীদের জন্য যে প্রকল্পগুলি নির্ধারিত করেছে :
তোমাদের WBCHSE Board দর্শন Project করার জন্য চারটি টপিক দিয়েছে। তোমাকে যেকোন একটি টপিক নিয়ে দর্শন Project খাতা তৈরি করতে হবে। নীচে চারটি টপিক হল -
(ক) লৌকিক ও অলৌকিক সন্নিকর্ষের পার্থক্য 
(খ) স্বার্থানুমিতি ও পরার্থানুমিতি 
(গ) বস্তুবাদ এবং তার বিভিন্ন প্রকার 
(ঘ) ভাববাদ - বার্কেলের আত্মগত ভাববাদ।

উপরের চারটি টপিক থেকে যে কোনো একটি টপিক নিয়ে তোমাকে Project খাতা তৈরি করতে হবে। আমি এখন (গ) "বস্তুবাদ এবং তার বিভিন্ন প্রকার" এই টপিকটি নিয়ে Project খাতা তৈরি করে দিচ্ছি।

Class 11 philosophy project 2024 wb pdf free download

Project তৈরি করার পরিকাঠামো :
Project খাতার মধ্যে যে Page গুলি রাখতে হবে :
1. Front Page
2. প্রকল্পের শিরোনাম
3. কৃতজ্ঞতা স্বীকার
4. সূচিপত্র : ভূমিকা, প্রকল্পের বিষয়, প্রকল্পের গুরুত্ব, প্রকল্পের উদ্দেশ্য, কর্ম পরিকল্পনা, তথ্যসংগ্রহ, তথ্যবিশ্লেষণ, সিদ্ধান্ত, প্রকল্পটির সীমাবদ্ধতা, গ্ৰন্থপঞ্জি 
5. গ্ৰন্থপঞ্জি 

Class 11 Philosophy project PDF


1. Front Page : এই পেজের মধ্যে তোমার স্কুলের নাম, তোমার নাম, ক্লাস ও সেমিষ্টারের নাম, রোল নং, বিভাগ, বর্ষ ইত্যাদি লিখতে হবে। এই Front Page টি Computer বা Phone থেকে বানাতে পাবো । তোমারা নিজের মতো বানাবে।

2. প্রকল্পের শিরোনাম : এখানে তুমি কোন টপিক নিয়ে প্রকল্প লিখবে, সেই টপিকের নাম লিখতে হবে। একটি পেজের মাঝে বড়ো করে শুধুমাত্র শিরোনামটা লিখতে হবে। আমি যে টপিক নিয়ে তোমাদের জন্য লিখে দিচ্ছে সেটি হল - "বস্তুবাদ ও তার বিভিন্ন প্রকার" তাহলে আমি একটি পেজের মাঝে বড়ো বড়ো করে "বস্তুবাদ ও তার বিভিন্ন প্রকার" লিখবো। তোমার যদি অন্য কোনো Topic হয়, তাহলে সেই টপিকের নাম বড়ো বড়ো করে মাঝে লিখবে। এই পেজে অন্য কোনো লাগবে না।

3. কৃতজ্ঞতা স্বীকার : আমি (নিজের নাম), বর্তমানে West Bengal Council of Higher Secondary Education Board এর অন্তর্গত Burda High School (তোমার নিজের স্কুলের নাম) এর ছাত্র বা ছাত্রী। আমার Class 11 Second Semester পাঠ্যক্রমের অন্তর্গত Project বিষয় হল : "বস্তুবাদ এবং তার বিভিন্ন প্রকার" (এখানে তোমার নিজের টপিকের নাম লিখবে)
এই Project টি করার জন্য দর্শন বিভাগের শিক্ষক মাননীয় আকাশ কুমার মহাশয়ের (তোমার দর্শন শিক্ষকের নাম লিখবে) প্রতি কৃতজ্ঞ এবং অন্যান্য শিক্ষক শিক্ষকতার পূর্ণ সহযোগিতা সুন্দরভাবে Project টি সম্পূর্ণ করতে পেরেছি। 
এছাড়াও যাদের কথা না বললেই নয়, তারা হলেন আমার সহপাঠী তাদের প্রতি রইল বুক ভরা ভালোবাসা।

4. সূচিপত্র : 
ভূমিকা : 
'The Father Of History' তথা গ্রিক দার্শনিক হেরোডোটাসকে অনুসরণ করে বলা যায় মানুষের জীবনের আসল সম্পত্তি হল 'জ্ঞান'। এই জ্ঞানের উৎস কী ? জ্ঞানের স্বরূপ কী ? যথার্থ জ্ঞানলাভ কীভাবে সম্ভব ? ইত্যাদি জ্ঞান সম্পর্কিত যাবতীয় প্রশ্ন দর্শনের অন্যতম শাখা জ্ঞানবিদ্যায় আলোচনা করা হয়। জ্ঞানের উৎস কী ? এই প্রশ্নটিকে কেন্দ্র করে জ্ঞানবিদ্যায় বিভিন্ন মতবাদ লক্ষ করা যায়। যথা- বুদ্ধিবাদ, অভিজ্ঞতাবাদ, স্বজ্ঞাবাদ ও বিচারবাদ। জ্ঞানলাভের ক্ষেত্রে তিনটি বিষয় থাকে। সেগুলি হল- জ্ঞান, জ্ঞাতা ও জ্ঞেয় বস্তু। জ্ঞান হল বিষয়ের যথার্থ উপলব্ধি। যিনি জ্ঞানলাভ করেন তিনি হলেন জ্ঞাতা। এবং, যে বিষয়ে জ্ঞান লাভ করা হয় তাকে বলা হয় জ্ঞেয় বস্তু। অর্থাৎ বলা যায় জ্ঞাতা ও জ্ঞেয় বস্তুর সম্পর্কই হল জ্ঞান।
জ্ঞেয় বস্তুর স্বরূপ কী ? জ্ঞেয় বস্তুর অস্তিত্ব কি জ্ঞাতার জানার উপর নির্ভর করে ? না কি জ্ঞেয় বস্তুর জ্ঞাননিরপেক্ষ পৃথক অস্তিত্ব আছে ? এই প্রশ্নকে কেন্দ্র করে পাশ্চাত্য দর্শনে দুটি ভিন্ন মতবাদ গড়ে উঠেছে। জ্ঞেয় বস্তুর জ্ঞাননিরপেক্ষ স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে। অর্থাৎ বস্তুর অস্তিত্ব জ্ঞাতার মনের উপর নির্ভর করে না। এই মতকে বলা হয় বস্তুবাদ। এই মতে যারা বিশ্বাসী তাদের বলা হয় বস্তুবাদী। অপরপক্ষে যারা বিশ্বাস করেন জ্ঞেয় বস্তুর অস্তিত্ব জ্ঞানসাপেক্ষ, অর্থাৎ বস্তুর অস্তিত্ব জ্ঞাতার উপর নির্ভর করে সেই মতবাদকে বলা হয় ভাববাদ। এই মতবাদে যারা বিশ্বাসী তাদের বলা হয় ভাববাদী  
জাতা ও জ্ঞেয় বস্তুর সম্পর্ক : জ্ঞেয় বস্তুর স্বরূপ দুই প্রকার  - ১) বস্তুবাদ ও ২) ভাববাদ আবার বস্তুবাদ দুই প্রকার - ১) সরল বস্তুবাদ ও ২) প্রতিরূপী বস্তুবাদ (লক) এবং ভাববাদ আবার দুই প্রকার - ১) আত্মগত ভাববাদ বা বিষয়ীগত ভাববাদ (বার্কলে) ও ২) বস্তুগত ভাববাদ বা বিষয়গত ভাববাদ (হেগেল) 

প্রকল্পের বিষয় : 
জ্ঞেয় বস্তুর অস্তিত্ব বিষয়ে মতবাদ বস্তুবাদ এবং তার বিভিন্ন প্রকার (Realism and Its Different Forms)

প্রকল্পের গুরুত্ব : 
বস্তুবাদ অনুযায়ী আমরা যে জগৎকে জানি সেই জগতের অস্তিত্ব আমাদের অভিজ্ঞতা বা মনের উপর নির্ভরশীল নয়। জগতের বিষয়সমূহের ব্যক্তিনিরপেক্ষ একটি স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে - এই মতবাদকে বলা হয় বস্তুবাদ। এই প্রসঙ্গে উল্লেখযোগ্য যে, মানুষের চিন্তার ইতিহাসে প্রথমে বস্তুবাদের আবির্ভাব হয়েছে। 'বস্তুর জ্ঞানাতিরিক্ত সত্তা আছে'- এইরূপ ধারণা নিয়েই দার্শনিকগণ প্রথমত তাদের চিন্তা শুরু করেন। পরে বিচারবিশ্লেষণের মাধ্যমে তারা ভাবতে থাকেন যে, বস্তু আংশিকভাবে বা সম্পূর্ণভাবে জ্ঞানের উপর নির্ভরশীল। সুতরাং বস্তুবাদ মতবাদটি বিস্তারিতভাবে আলোচনার মাধ্যমে বস্তুবাদ এবং তার বিভিন্ন প্রকার সম্পর্কে যে প্রকল্পটি রচিত হল তার গুরুত্ব এবং প্রয়োজনীয়তা অপরিসীম।

প্রকল্পের উদ্দেশ্য :
1. জ্ঞেয় বস্তুর স্বরূপ সম্বন্ধে জ্ঞান লাভ করা।
2. বস্তুবাদীদের মূল বক্তব্য সম্পর্কে জ্ঞান লাভ করা।
3. বস্তুবাদের প্রকারভেদ সম্পর্কে আলোচনা করা।
4.  সরল বস্তুবাদ ও প্রতিরূপী বস্তুবাদের মধ্যে কোথায় সাদৃশ্য ও কোথায় বৈসাদৃশ্য তা লক্ষ করা।
5.  মুখ্যগুণ এবং গৌণগুণগুলি সম্বন্ধে ধারণা লাভ করা।
6. নব্য বস্তুবাদ এবং সবিচার বস্তুবাদ সম্পর্কে আলোচনা করা।

কর্ম পরিকল্পনা :
প্রকল্পটি বাস্তবায়নের জন্য শ্রেণিতে শিক্ষক/ শিক্ষিকার উপস্থিতিতে কর্মপরিকল্পনাটি গ্রহণ করা হয়। পরিকল্পনাটি নিম্নে আলোচনা করা হল -
1. বস্তুবাদীদের মত বিশ্লেষণ করা।
2. সরল বস্তুবাদ ও প্রতিরূপী বস্তুবাদ সম্পর্কে আলোচনা করা।
3. লকের মুখ্যগুণ ও গৌণগুণ সম্পর্কে আলোচনা করা।
4. নব্য বস্তুবাদ ও সবিচার বস্তুবাদ সম্পর্কে ধারণা অর্জন করা।

Class 11 philosophy project 2024 wb pdf

তথ্যসংগ্রহ : 
বিভিন্ন পাঠ্যপুস্তক, বিদ্যালয়ের গ্রন্থাগারের নানান পাশ্চাত্য দর্শনের বই এবং শিক্ষক / শিক্ষিকার ক্লাস থেকে মূল্যবান তথ্য সংগ্রহ ও পরামর্শ গ্রহণ করা হয়েছে।

তথ্যবিশ্লেষণ :
বস্তুবাদ : বস্তুবাদ অনুসারে অভিজ্ঞতাগ্রাহ্য বস্তুজগতের অস্তিত্ব আমাদের জানার উপর নির্ভর করে না, অর্থাৎ কোনো জ্ঞাতা না জানলেও জ্ঞেয় বস্তুর অস্তিত্ব থাকে। এরূপ মতবাদ দাবি করে যে জ্ঞেয় বস্তুর স্বাধীন ও স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে বলেই সেগুলি সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান হয়। এই তত্ত্বে যারা বিশ্বাস করেন তাদের বলা হয় বস্তুবাদী। পাশ্চাত্য দর্শনে বস্তুবাদী দার্শনিকদের মধ্যে জন লক্, বার্ট্রান্ড রাসেল, জি ই ম্যুর, পেরি, মারভিনের নাম উল্লেখযোগ্য।

বস্তুবাদের মূল বস্তব্য : 1.এই মতবাদ অনুযায়ী, জ্ঞানের বাইরে বস্তুর স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে। যেমন- পারিপার্শ্বিক পরিবেশে পাহাড়, পর্বত, নদী-নালা, ফুল-ফল ইত্যাদি যা কিছু আমরা দেখতে পাই তা প্রকৃতই অস্তিত্বশীল, সেগুলির অস্তিত্ব আমাদের জ্ঞানের উপর নির্ভর করে না। 2. বস্তুবাদীদের মতে বস্তুর সঙ্গে জ্ঞানের কোনো আন্তর বা অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক নেই। বস্তুবাদীরা বাহাসম্পর্কে বিশ্বাসী। বাহাসম্পর্ক হল সেই সম্পর্ক, যে সম্পর্ক ভেঙে দিলেও ওই সম্পর্কে আবদ্ধ বিষয় দুটির কোনো অস্তিত্বহানি হয় না। তাই এদের মতে জ্ঞানের বিষয় না হয়েও বস্তুর স্বতন্ত্র অস্তিত্ব থাকতে পারে। 3. বস্তুবাদীরা বহুত্ববাদে বিশ্বাসী। এই তত্ত্ব অনুযায়ী জগতে বহু বস্তুর জ্ঞাননিরপেক্ষ স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে। বস্তুবাদ অনুসারে এক-একটি জ্ঞানের এক-একটি বিষয় থাকে। এই জ্ঞানের বিষয় এক বা দুই নয়, বহু। 4. বস্তুবাদীদের মতে, বস্তু আছে বলেই বস্তুর জ্ঞান হয়। অর্থাৎ বাহ্যবস্তুর দ্বারা জ্ঞান উৎপন্ন হয়। যে বস্তু যেমন সেই বস্তুর জ্ঞানও সেরকমই হবে। 5. বস্তুবাদীরা অজ্ঞাত বস্তুর অস্তিত্ব স্বীকার করেছেন। যেমন- সমুদ্রতলের বহু মণিমুক্ত এখনও আবিষ্কৃত হয়নি। বস্তুবাদীরা সিদ্ধান্ত করেন আমরা যখন কোনো বস্তুকে জানি শুধুমাত্র তখনই যে সেই বস্তুটির অস্তিত্ব থাকে তা নয়, আমরা যখন তাকে জানি না, তখনও তার অস্তিত্ব থাকে।

বস্তুবাদের প্রকারভেদ : বস্তুবাদী মতকে সাধারণত চার ভাগে ভাগ করা যায়। যথা - 1. সরল বস্তুবাদ বা লৌকিক বস্তুবাদ, 2. প্রতিরূপী বস্তুবাদ বা বৈজ্ঞানিক বস্তুবাদ, 3. নব্য বস্তুবাদ এবং 4. সবিচারবাদ

সরল বস্তুবাদ : যে বস্তুবাদে গুণবিশিষ্ট জ্ঞেয় বস্তুকে জ্ঞাতা সরাসরি বা অপরোক্ষরূপে ইন্দ্রিয়ের মাধ্যম জানে তাকে সরল বা লৌকিক বস্তুবাদ বলে। এসব বস্তুর অস্তিত্ব আমাদের জ্ঞাননিরপেক্ষ বা মননিরপেক্ষ। আমাদের মনের বাইরে এদের স্বাধীন অস্তিত্ব আছে। আমরা বস্তুকে সরাসরি জানতে পারি। সরল বস্তুবাদীদের মতে রূপ, রস, গন্ধ, আকার, দৈর্ঘ্য প্রভৃতি বস্তুর যেসব গুণ আমরা জানি বা প্রত্যক্ষ করি, সেগুলি সবই বস্তুতে থাকে।
সাধারণ মানুষ বিশ্বাস করে যে, বাহ্য জগতের বস্তু ও তার গুণগুলিকে সাক্ষাৎভাবে জানা যায়। এই মতবাদকে সাক্ষাৎ বস্তুবাদও বলা হয়। এই মতবাদের অন্যতম সমর্থক হলেন দার্শনিক জিই ম্যুর।

 ⬛একাদশ শ্রেণির নতুন দর্শন সিলেবাস ও প্রশ্ন কাঠামো | WB Class 11 Philosophy New SEMESTER Syllabus and Question Pattern - Click Here

সরল বস্তুবাদের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় : 1. বাহ্যিক জগতে অসংখ্য বস্তু রয়েছে। যেমন - গাছপালা, নদী-নালা, পাহাড়-পর্বত ইত্যাদি। এই বস্তুগুলির বিভিন্ন ধর্ম রয়েছে এবং ধর্মগুলি বস্তুগত। প্রতিটি বস্তু নিজস্ব গুণ ও স্বাতন্ত্র্য নিয়ে জগৎকে বৈচিত্র্যময় করে রেখেছে। 2. বস্তুমাত্রই মননিরপেক্ষ। অর্থাৎ বাহ্যিক বস্তুর অস্তিত্ব এমনকি তার গুণের অস্তিত্বও আমাদের অনুভবের উপর নির্ভর করে না। যেমন- সমুদ্রের গভীরে যে অজানা বস্তু আছে, তা কেউ প্রত্যক্ষ করুক বা না করুক তার অস্তিত্ব থাকবে। 3. সরল বস্তুবাদীদের মতে, বস্তুকে সাক্ষাৎ অনুভবে পাওয়া যায়, অর্থাৎ বস্তুর জ্ঞান মাত্রই অপরোক্ষ জ্ঞান। ব্যক্তি ও বস্তুর জ্ঞানের মধ্যে কোনো মাধ্যম থাকে না। আমরা বস্তু ও বস্তুর গুণকে সরাসরি বা প্রত্যক্ষভাবে জানতে পারি। 4. সাক্ষাৎ অনুভবে যা পাওয়া যায়, তাই বস্তু বা বস্তুধর্ম। অর্থাৎ বস্তুটি বাস্তবে যেমন, তাকে ঠিক সেইভাবেই জানা যায়। বস্তু সম্পর্কে আমাদের জ্ঞান সর্বদা বস্তুর অনুরূপ হয়। সুতরাং বস্তু বাস্তবে ও জ্ঞানে একইরকম থাকে- এই দুটির মধ্যে কোনো প্রভেদ নেই। 5. সরল বস্তুবাদীদের মতানুযায়ী, বস্তু মাত্রই ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য। বাহ্যবস্তু এবং তার গুণগুলিকে আমরা ইন্দ্রিয়ানুভবের মাধ্যমে জানি। অর্থাৎ বস্তুমাত্রই ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য এবং বস্তু সম্বন্ধে যেসব উক্তি করা হয়, ইন্দ্রিয়ানুভবের দ্বারা সেসব উক্তির সত্যতা যাচাই করা যায়। যেমন-আমরা ইন্দ্রিয়ানুভবের দ্বারা জানি যে, 'এটি একটি চেয়ার'- এই জ্ঞানটি সত্য কি না তা ইন্দ্রিয়ানুভবের দ্বারা যাচাই করে নেওয়া যায়। 6. বাহ্যবস্তু সম্পর্কে আমাদের যে সাক্ষাৎ ইন্দ্রিয়ানুভব হয়, তা সেই বাহ্যবস্তুর দ্বারাই সৃষ্ট হয়। উদাহরণস্বরূপ বলা যায় টেবিল সম্পর্কে আমাদের যে ইন্দ্রিয়ানুভব হয়, তা সেই টেবিলের দ্বারাই সৃষ্ট হয়। বাহ্যবস্তু না থাকলে আমাদের সাক্ষাৎ অনুভব সম্ভব হয় না। সুতরাং বাহ্যবস্তু থেকেই আমাদের বস্তু-ধারণা উৎপন্ন হয়।

প্রতিরূপী বস্তুবাদ : যে মতবাদে বলা হয় বস্তুর মন নিরপেক্ষ স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে এবং বস্তু ও তার গুণগুলিকে সরাসরি ইন্দিয় অভিঙতায় না জেনে, কতকগুলি ধারণা বা প্রতিরূপের মাধ্যমে জানতে পারি, তাকে বলে প্রতিবৃন্দ বস্তুবাদ। এই মতবাদ অনুযায়ী 'ধারণা' বস্তুর প্রতিনিধিত্ব করে। ধারণায় বস্তুবাদ। প্রতিফলিত, প্রতিবিম্বিত অবস্থায় আমরা বস্তুকে জানি, এইজন্য এই মতবাদকে প্রতিনিধিত্বমূলক বস্তুবাদ - বলা হয়। আবার এই মতবাদকে বিজ্ঞানসম্মত বস্তুবাদ বলার কারণ এই যে লকের বক্তব্যের সঙ্গে তৎকালীন বৈজ্ঞানিক চিন্তা ভাবনার যথেষ্ট মিল বা সাদৃশ্য ছিল। তা ছাড়া এই মতবাদকে পরোক্ষ বস্তুবাদও বলা হয়। কারণ এই মতানুসারে আমরা সরাসরি ভৌত বস্তুকে জানতে পারি না, কতকগুলি প্রতিরূপ বা ধারণার মাধ্যমে জানি। এই মতবাদের প্রধান প্রবক্তা হলেন ব্রিটিশ দার্শনিক জন লক্ এবং ফরাসি দার্শনিক রেনে দেকার্ত।

প্রতিরূপী বস্তুবাদের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় : 1. বাহ্যজগতের বাস্তব অস্তিত্ব আছে। এখানে বস্তু আছে। এইসব বস্তু সংখ্যায় অনেক ও বিচিত্র ধর্মবিশিষ্ট। এদের প্রত্যেকেরই নিজস্ব সত্তা আছে। তাই এইসব বস্তুর স্বরূপ আমাদের জানা বা না-জানার উপর নির্ভর করে না। 2. লকের মতে আমাদের মন একটি ক্যামেরার ফিল্মের মতো বা স্বচ্ছ বস্তু বা ব্যক্তিকে না পেয়ে তার প্রতিরূপ বা ধারণাকে পাই, ঠিক তেমনই আমাদের মনে বস্তু বা ব্যক্তির পরিবর্তে তার ধারণা বা প্রতিরূপ প্রতিফলিত হয়। এই ধারণা বা প্রতিরূপের পর্দার মতো। ক্যামেরার ফিল্মে আমরা যেমন মাধ্যমেই আমরা বস্তুকে জেনে থাকি। কাজেই বস্তু সাক্ষাৎভাবে আমাদের অনুভবে ধরা দেয় না; আমরা সাক্ষাৎভাবে অনুভবে যা পাই, তা হল বস্তুর ধারণা বা প্রতিরূপ। 3. লকের মতে, আমাদের গুণের জ্ঞান হয় কিন্তু কোনো বস্তু বা দ্রব্যের জ্ঞান হয় না। তাহলে প্রশ্ন ওঠে যে, বস্তু বা দ্রব্য কী?-এর উত্তরে লক্ বলেন, বস্তু হল গুণের আধার বা আশ্রয়। গুণগুলি যেহেতু শূন্যে ভাসমান অবস্থায় থাকতে পারে না, সেহেতু এদের নিশ্চয়ই কোনো আশ্রয় বা আধার থাকবে। দ্রব্যকে জানা যায় না। কিন্তু তা সত্ত্বেও গুণের আধার হিসেবে দ্রব্যকে স্বীকার করতে হয়। 4. লকের মতে বস্তুর গুণ দুই প্রকার মুখ্যগুণ ও গৌণগুণ।
লক্ বলেন দ্রব্যে যে গুণগুলি বর্তমান থাকে, সেগুলিকে বলা হয় মুখ্যগুণ। যেমন- বিস্তৃতি, আকার, আয়তন, সংখ্যা, গতি ইত্যাদি। এসব গুণ বস্তুর সঙ্গে অবিচ্ছেদ্যভাবে জড়িত থাকে। লকের মতে, এই মুখ্যগুণসমূহের বস্তুগত অস্তিত্ব আছে। এগুলি প্রকৃতপক্ষে বস্তুর প্রতিরূপ। অপরপক্ষে যে গুণগুলি প্রকৃতপক্ষে বস্তুতে বর্তমান নেই অথচ ব্যক্তিমন বস্তুতে আরোপ করে, সেগুলিকে বলা হয় গৌণগুণ। যেমন- বর্ণ, স্বাদ, গন্ধ, উত্তাপ, শৈত্য প্রভৃতি। এইগুলি ব্যক্তির মনের উপর নির্ভরশীল। গৌণগুণগুলি কোনো-না-কোনোভাবে মনসাপেক্ষ। আমরা ইন্দ্রিয়ানুভবে দ্রব্য বা বস্তুকে পাই না- পাই বস্তুধর্মের প্রতিরূপ বা ধারণা। বস্তুর জ্ঞান ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য নয়, কিন্তু বস্তুধর্ম বা গুণ ইন্দ্রিয়গ্রাহ্য।

সরল বস্তুবাদ ও প্রতিরূপী বস্তুবাদের তুলনা : সরল বস্তুবাদ ও প্রতিরূপী বস্তুবাদের মধ্যে কিছু কিছু মিল ও অমিল পরিলক্ষিত হয়।
মিল বা সদৃশ্য : 
1. উভয় মতবাদই স্বীকার করে যে, জ্ঞাননিরপেক্ষ বস্তুজগতের স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে। আমাদের জানা বা না-জানার উপর বস্তুজগতের অস্তিত্ব নির্ভর করে না। 2. উভয় মতবাদই বহুত্ববাদে বিশ্বাসী। এই তত্ত্ব অনুযায়ী জগতে বহু বস্তুর জ্ঞাননিরপেক্ষ স্বতন্ত্র অস্তিত্ব আছে। তাই জ্ঞানের বিষয় এক বা দুই নয়, বহু। 3. উভয় মতবাদই স্বীকার করে যে বস্তুর সঙ্গে জ্ঞানের কোনো আন্তর বা অভ্যন্তরীণ সম্পর্ক নেই, আছে বাহ্যিক সম্পর্ক। 4. উভয় মতবাদে বস্তুকে গুণবিশিষ্টরূপে স্বীকার করা হয়েছে। উভয় মতবাদ মনে করে যে, বস্তু যেমন মনের বাইরে আছে তেমনি সেই বস্তুতে কিছু গুণও আশ্রয় করে আছে।
অমিল বা বৈসাদৃশ্য :
একদিকে সরল বস্তুবাদ সাধারণ মানুষের সহজ-সরল বিশ্বাসকে অবলম্বন করে গড়ে উঠেছে। অপরপক্ষে তদানীন্তন বিজ্ঞানীদের চিন্তাভাবনা, ধ্যানধারণাকে 'অবলম্বন করে লক প্রতিরূপী বস্তুবাদের প্রবর্তন করেছেন।
একদিকে সরল বস্তুবাদীদের মতে, সাক্ষাৎভাবে বা সোজাসুজিভাবে বস্তুকে জানা যায়। অন্যদিকে অন্যদিকে প্রতিরূপী বস্তুবাদ অনুসারে, ইন্দ্রিয়ের সংস্পর্শে এলে বাহ্যবস্তু ব্যক্তিমনে ধারণার সৃষ্টি করে এবং ওই ধারণার মাধ্যমে বাহ্যবস্তুকে পরোক্ষভাবে জানা যায়।
একদিকে সরল বস্তুবাদ অনুযায়ী বস্তুর গুণ একপ্রকার এবং তা হল বস্তুগত। তাই এই মতবাদ বস্তুর জ্ঞানবৈচিত্রোর ব্যাখ্যা দিতে পারে না। অন্যদিকে প্রতিরূপী বস্তুবাদ অনুসারে বস্তুর গুণ দু-প্রকার। যথা- মুখাগুণ ও গৌণগুণ। মুখ্যগুণগুলিকে বস্তুগত এবং গৌণগুণগুলিকে মনোগত বলা হয়।

নব্য বস্তুবাদ : সাম্প্রতিককালে হন্ট, মারভিন, পেরি, মন্টেগু, পিটকিন, রাসেল, ম্যুর অভিনব মতবাদ নব্য বস্তুবাদ নামে পরিচিত।
নব্য বস্তুবাদের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় : 1. জনের বিষয় মাত্রেরই মননিরপেক্ষ সত্তা আছে। 2. বস্তুজ্ঞান অপরোক্ষ অর্থাৎ সাক্ষাৎ। 3. ইন্দ্রিয়ানুভবে আমাদের যথাযথ বস্তুজ্ঞান হয়। 4. জ্ঞাতা ও জ্ঞেয়বস্তুর সম্বধ বাহ্যিক। তাই জ্ঞাতা না থাকলেও বস্তুর অস্তিত্বের হানি হয় না। 5. জগতের মূল উপাদান মন নয়, জড় নয়- তা হল নিরপেক্ষ পদার্থ 

সবিচার বন্ধুবাদ : এই মতবাদ অনেকাংশে লকের প্রতিরূপী বস্তুবাদের অনুরূপ। কারণ প্রতিরূপী বস্তুবাদের মতো সবিচার বস্তুবাদেও পরোক্ষ অনুভবতত্ত্ব প্রতিষ্ঠা করা হয়। অধ্যাপক ড্রেক, লাজ্জয়, প্রাট্ট রোজার্স, সান্টায়ন সেলার্স এবং স্ট্রং এই সাতজন দার্শনিক মিলে 'সবিচার বস্তুবাদ সংক্রান্ত প্রবন্য' নামক এক অন্য প্রকাশ করেন। এই গ্রন্থে প্রকাশিত মতবাদই সবিচার বস্তুবাদ নামে পরিচিত।
সবিচার বস্তুবাদের মূল প্রতিপাদ্য বিষয় : 1. প্রত্যক্ষের বিষয়ের মননিরপেক্ষ অস্তিত্ব আছে। 2. বিষয়জ্ঞান পরোক্ষ, ইন্দ্রিয় উপাত্তের মাধ্যমে বস্তুজ্ঞান হয়। 3. মন সরাসরি ইন্দ্রিয় উপাত্তকে প্রত্যক্ষ করতে পারে। 4. ইন্দ্রিয় উপাত্ত জড়ধর্মী নয়, আবার চেতনধর্মীও নয়। 

philosophy project class 11

সিদ্ধান্ত : জেয়বস্তুর অস্তিত্ব বিষয়ে বস্তুবাদ মতবাদটির উৎপত্তি হয়েছে, যেটি তাৎপর্যপূর্ণ। ব্যাপকতম অর্থে বস্তুবাদ বলতে যা বোঝায় তা হল জ্ঞান অতিবর্তী বা জ্ঞান অতিক্রান্ত বা জ্ঞাননিরপেক্ষ বস্তুর অস্তিত্বে বিশ্বাস। আর সংকীর্ণ অর্থে বস্তুবাদ বলতে বোঝায় যা অনুভূত হয় বা জ্ঞাত হয় তারই জ্ঞাননিরপেক্ষ বা অনুভূতি নিরপেক্ষ অস্তিত্ব আছে। জ্ঞান সর্বদা জ্ঞাতা ও জ্ঞেয়বস্তুর সম্পর্ক প্রকাশ করে। জ্ঞাতা ভিন্ন বা জ্ঞাতা নিরপেক্ষ কোনো জ্ঞানই সম্পূর্ণ হয় না। সুতরাং বাহ্যবস্তুর অস্তিত্ব জানার জন্য জ্ঞাতার উপর নির্ভরশীল হতে হয়। সুতরাং, বলা যায় বস্তুবাদ এই মতবাদটির গুরুত্ব অপরিসীম।


প্রকল্পটির সীমাবদ্ধতা : 
বস্তুবাদ বিষয়ে লক্-এর অভিমত প্রকল্পটিতে বিস্তারিত আলোচনা করা হয়েছে, ফলে আমাদের জানের পরিধি বিস্তার লাভ করেছে। কিন্তু বস্তুবাদ এবং তার বিভিন্ন প্রকার সম্পর্কিত আলোচনা একটি গুরুত্বপূর্ণ বিষয় এবং তা সময়সাপেক্ষ। বিদ্যালয়ে অন্যান্য পাঠ্যবিষয়ের উপরও যথেষ্ট গুরুত্ব আরোপ করতে হয়েছে বলে অল্প সময়ে প্রকল্পটি রচনা করা হয়েছে। এই কারণে প্রকল্পটি ততটা তথ্যসমৃদ্ধ হয়ে উঠতে পারেনি বলে আমার ধারণা। তা ছাড়াও প্রকল্পটি সম্পর্কে ধারণা তৈরিতে আমায় নানান বাধার সম্মুখীন হতে হয়। আমি এই সমস্ত বাধা কাটিয়ে উঠতে পেরেছি-এ কথা বলা সংগত নয়। এখানেই প্রকল্পটির সীমাবদ্ধতা থেকেই যায়।

5. গ্ৰন্থপঞ্জি :
 তুমি এই Project টি তৈরি করার সময় কোনো কোনো বইয়ের সাহায্য নিয়েছো  সেই বই গুলির নাম ও প্রকাশিত সংস্থা লিখতে হবে এই গ্ৰন্থপঞ্জি অংশে। তবে গ্ৰন্থপঞ্জি না লিখলেও কোনো সমস্যা নেই। তোমার স্কুলের দর্শন বিষয়ের শিক্ষক মহাশয়ের একবার গ্ৰন্থপঞ্জি অংশ সম্বন্ধে জিঙ্গাসা করে নিবে।

WBCHSE Class 11 Second Semester Philosophy Model Question Paper 2025 | একাদশ শ্রেণির দ্বিতীয় সেমিষ্টার দর্শন প্রশ্নপত্র - Click Here

আমাদের Social Media Link - 
SOCIAL MEDIA FOLLOW
Whatsapp Group              Click Here
Telegram             Click Here

উপসংহার :
আমাদের এই প্রজেক্ট লেখাগুলো যদি তোমাদের কাজে লাগে তবে আমাদের পরিশ্রম সার্থক হবে। আর ভালো লাগলে বা খারাপ লাগলেও অবশ্য Comment করে জানাতে ভুল না।

                          THANK YOU !

একটি মন্তব্য পোস্ট করুন

1 মন্তব্যসমূহ
* Please Don't Spam Here. All the Comments are Reviewed by Admin.

WB Semester Ads-2

WB Semester Ads-3